Road to Germany ( Student Visa ) | পর্ব-০১




ভিসা ইন্টারভিউর জন্য জার্মান এম্বাসির লম্বা ওয়েটিং পিরিয়ড মাথায় রেখে কীভাবে স্টেপ বাই  স্টেপ পরিকল্পনা সাজাবেন এবং ব্যাচেলর/ মাস্টার্স প্রোগ্রাম এ আবেদন করতে কীভাবে আগাতে হবে তা নিয়েই আজকের লেখা

স্টেপ ১ : আপনার জন্ম নিবন্ধন, এন আই ডি, এবং সার্টিফিকেট এ আপনার নাম, আপনার বাবার নাম, আপনার মায়ের নাম এবং আপনার জন্ম তারিখ মিল থাকার পর আপনি এবার ই-পাসপোর্ট করুন। ( ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠা যথেষ্ঠ)


স্টেপ ২ : জার্মানিতে বছরে দুইটি সেশনে ব্যাচেলর/মাস্টার্স কোর্সে আবেদন করা যায়। 

সামার সেমেস্টারে ক্লাশ শুরু সাধারণত : ১ এপ্রিল 

উইন্টার সেমেস্টারে ক্লাশ শুরু সাধারণত : ১ অক্টোবর 


সামারে আবেদন শুরু অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বরে

উইন্টারে আবেদন শুরু এপ্রিল-মে-জুনে


বর্তমানে এম্বাসিতে ভিসা ইন্টার্ভিউর জন্য এপয়েন্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশন এর পর ডক মেইল পাওয়া-ইন্টার্ভিও-ভিসা পাওয়া সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ মাস সময় লাগে।


তাই আপনি উপরে উল্লিখিত যে সেমেস্টার এ যেতে চান সে সেমেস্টারকে কেন্দ্র করে অন্তত ১৮ মাস পূর্বে এপয়েন্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন। 


  • এপয়েন্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশন লিংক : Click here
  • কীভাবে এপয়েন্টমেন্ট নিবেন তার ইউটিউব ভিডিওর লিংক : Click here
  • এপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার সময় অবশ্যই মার্জিত ইমেল এড্রেস ব্যাবহার করবেন। (আপনার নামের সাথে মিল রেখে)
  • এম্বাসি থেকে যে ইমেল আপনার কাছে আসবে সেটা রেখে দিবেন। শুরু হলো আপনার যাত্রা।


স্টেপ ৩: আপনি যদি ব্যাচেলর ক্যান্ডিডেট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার প্রথম কাজ হলো আপনার এস এস সির সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট+ এইচ এস সির সার্টিফিকেট+ট্রান্সক্রিপ্ট একটা ফাইলে বন্দী করা। ফাইল বন্দী করে আপনার পছন্দের বিষয়ে বাংলাদেশ এর একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর এ ভর্তি হওয়া। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন অনাবিন ওয়েবসাইটে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান H+ হয়। আপনার ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনিমাম পাসিং গ্রেড ২.০০ হলে আপনি জার্মান গ্রেড এ একটা আলাদা সুবিধা পাবেন। 



ভর্তির পর আপনার কাজ হলো আপনার ব্যাচেলর প্রোগ্রামের মোট ক্রেডিটের ২৫% ক্রেডিট ভালো সিজিপিএ নিয়ে কম্পলিট করা। ( এই ধাপ কম্পলিট করার পাশাপাশি আই ই এল টি এস এর জন্য এক সেট ক্যাম্ব্রিজ এর বই কিনুন সাথে ইউটিউবে নিয়মিত ভিডিও দেখুন এর উপর )


আপনি যদি মাস্টার্স এর এপ্লিকেন্ট হোন তাহলে এই ধাঁপে আপনাকে আপনার এস এস সি, এইচ এস সি এবং অনার্সের সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট ফাইল বন্দী করতে হবে । এবার আপনার কাজ হলো আপনার ভার্সিটি থেকে মিনিমাম পাসিং গ্রেড ফর ডিগ্রী সংগ্রহ করা। 


এখন আপনাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে তা হলো আপনার অনার্স সিজিপিএকে জার্মান গ্রেডে কনভার্ট করতে হবে। 


  •  জার্মান গ্রেড এ কনভার্ট করার লিংক: Click here


এখন আপনাকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে তা হল আপনার ব্যাচেলর এর টোটাল ক্রেডিট জার্মান ইসিটিএস এ কত ইসিটিএস তার একটা আনুমানিক ধারণা নিতে হবে এবং সাব্জেক্ট ভিত্তিক ইসিটিএস এর ধারণা নিতে হবে। 

  • ইসিটিএস নিয়ে ধারণা পাওয়ার লিংক: Click here

এইবার আপনার মূল কাজ শুরু-আপনাকে আপনার স্টাডি ব্যাকগ্রাউন্ড এবং সাব্জেক্ট এর সাথে মিল রেখে নিম্নের দুটি সাইট থেকে আপনার যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী কোর্স খুঁজে বের করতে হবে ( আই এল টি এস~৬,৬.৫,৭) এটুক রেঞ্জকে আমলে নিয়ে। 



সাইট থেকে কোর্স খুঁজে পাওয়ার নিয়ম জানতে ভিডিওর লিংক : Click here


আপনার পছন্দ, যোগ্যতা, প্রায়োরিটি সব কিছুর সমন্বয় করে একটা লিস্ট তৈরী করুণ। সেই লিস্টে ভার্সিটির নাম, কোর্সের নাম, ডেডলাইন , আই ই এল টি এস স্কোর, জার্মান লেংগুয়েজ এবং রেস্ট্রিকটেড/ নন রেস্ট্রিকটেড এই টার্ম গুলি যথাযথভাবে লিখুন । 


এবার আপনার করা লিস্ট থেকে আই ই এল টি এস এ কত স্কোর তুললে ম্যাক্সিমাম ভার্সিটিতে আবেদন করতে পারবেন সেই ভিত্তিতে টার্গেট সেট করুন। এবার আই এল টি এস এ সেই স্কোর পেতে নেমে পড়ুন।


জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের কয়েকটি প্রক্রিয়া রয়েছে-


  •  ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে সরাসরি এপ্লাই
  • ইউনিএসিস্ট থেকে ভিপিডি নিয়ে ভার্সিটির সিলেক্টেড পোর্টালের মাধ্যমে এপ্লাই
  • ইউনিভার্সিটির পোর্টালে সরাসরি এপ্লাই

এই আবেদন প্রক্রিয়া আবার দুইভাবে সম্পন্ন হতে পারে-


শুধুমাত্র অনলাইন এপ্লাই:

এই প্রক্রিয়ায় আপনাকে ইউনিএসিস্টে শুধুমাত্র আপনার তথ্য এবং ডকুমেন্টস এর পিডিএফ ফাইল আপলোড করে আপনার পছন্দের বিষয় নির্বাচন করে ইউনিএসিস্ট এ পেমেন্ট কম্পলিট করে বসে থাকলেই বাকী সব অটোমেটিক হয়ে যাবে। 

ভার্সিটির পোর্টালেও অনলাইন এপ্লাই একই পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। 


 অনলাইন+অফলাইন এপ্লাই:

এই প্রক্রিয়ায় আপনাকে ইউনিএসিস্টে আপনার তথ্য এবং ডকুমেন্টস এর পিডিএফ ফাইল আপলোড করে আপনার পছন্দের বিষয় নির্বাচন করে ইউনিএসিস্ট এ পেমেন্ট কম্পলিট করে বসে থাকলেই হবেনা সেই সাথে ইউনিএসিস্ট এর জার্মান ঠিকানায় আপনার নিকট থেকে যে যে ডকুমেন্ট চাওয়া হয়েছে তা নোটারী করে পাঠিয়ে দিতে হবে।


ভিপিডির মাধ্যমে এপ্লাই

ইউনিএসিস্ট এ আপনার নির্বাচিত কোর্সের ভিপিডির জন্য আবেদন করার পর ইউনিএসিস্ট আপনাকে ৬-৭ সপ্তাহের মধ্যে ইভালুয়েশন রিপোর্ট/ভিপিডি আপনার ইউনিএসিস্ট একাউন্ট এ আপলোড করে দিবে এবং আপনার ইমেল এ পাঠিয়ে দিবে। 


এবার আপনি এই ভিপিডি আপনার সেই পছন্দের ভার্সিটির পছন্দের কোর্সের জন্য তাদের এপ্লিকেশন ওয়েবসাইটে অন্যান্য তথ্য-ডকুমেন্টস এর সাথে ভিপিডি আপলোড করে সাবমিট করার মাধ্যমে আপনার আবেদন সম্পন্ন করবেন এবং অফার লেটার এর জন্য অপেক্ষা করবেন। 


জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করতে যেসব পেপারস লাগবে :


১.জন্ম নিবন্ধন ( সংগ্রহে রাখুন, এপ্লাই এ লাগবেনা তবে ভবিষ্যতে লাগবে)

২.জাতীয় পরিচয় পত্র ( পাসপোর্ট এবং ব্লক একাউন্ট খুলতে লাগবে)

৩.পাসপোর্ট (এপয়েন্টমেন্ট রেজিষ্ট্রেশন-ভিসা-বিদেশ ভ্রমণ-ইত্যাদি)

৪.এস এস সি সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট

৫.এইচ এস সি সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট 

৬.ব্যাচেলর ডিগ্রী সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট

(যারা ব্যাচেলর এ আবেদন করবেন আপনারা ব্যাচেলর আপনাদের ব্যাচেলর ডিগ্রীর টোটাল ক্রেডিটের ২৫% কম্পলিট ক্রেডিটের ট্রান্সক্রিপ্ট নিবেন আপনার ভার্সিটি থেকে)

৭.মিনিমাম পাসিং গ্রেড ফর ব্যাচেলর ডিগ্রী

৮.মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন সার্টিফিকেট (MOI)

৯.রিকোমেন্ডেশন লেটার(২ টি-আলাদা আলাদা টিচার থেকে)

১০.মাস্টার্স ডিগ্রী সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট 

১১.আই ই এল টি এস সার্টিফিকেট( মিনিমাম ওভারঅল স্কোর ৫.৫-এম্বাসি রিকোয়ার্মেন্ট)

১২.ইউরোপাস সিভি

১৩.লেটার অফ মোটিভেশন 

১৪.জব এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট 

১৫.রিকোমন্ডেশন লেটার ফ্রম অফিস হেড(জব এক্সপেরিয়েন্স থাকলে)

১৬.স্কিল ট্রেইনিং সার্টিফিকেট

১৭.ভলান্টিয়ার এক্টিভিটিজ সার্টিফিকেট 


যে সকল পেপারের সার্টিফাইড কপি চাইবে এবং হার্ড কপি পাঠাতে হবে সে সকল পেপারস নোটারী করে সাবমিট করতে হবে। অবশ্যই অবশ্যই ফটোকপিতে নোটারী করবেন। ভুল করেও অরিজিনাল কপিতে নোটারী বা সত্যায়িত করবেন না।

(আদালত এলাকা, ফার্মগেট ,মোহাম্মদপুর টাউন হল, নীলক্ষেত এছাড়াও আপনার এলাকায় পেতে পারেন। প্রতিকপি ১০-২০-৩০ টাকা করে নিবে সর্বোচ্চ। দামাদামি করে নিবেন।  


  • ইউরোপাস সিভি তৈরী করার লিংক: Europass CV
  • ইউরোপাস সিভি তৈরী করার ভিডিও গাইডলাইন: Video link
  • ইউনিএসিস্ট এ একাউন্ট ওপেন ও আবেদনের লিংক: Click here
  • ইউনিএসিস্ট এ ফাইল আপলোড করার ভিডিও গাইডলাইন: Video link
  • ইউনিএসিস্ট এ আবেদন করার ভিডিও গাইডলাইন : Video link
  • ইউনিএসিস্ট এ পেমেন্ট করার ভিডিও গাইডলাইন: Video link

(ইউনিএসিস্ট এ প্রতি সেশনের প্রথম এপ্লাই এ ৭৫ ইউরো ফি এবং পরবর্তী প্রতি এপ্লিকেশন ৩০ ইউরো করে চার্জ কাটবে। পেমেন্ট এর জন্য আপনার কার্ডে ডলার এন্ডোর্স করা থাকতে হবে)

ইউনিএসিস্ট এ পেমেন্ট এর জন্য EBL VISA DEBIT CLASSIC DUAL CURRENCY CARD খুব ই স্মুথ। 


  • ইউনিএসিস্ট এ হার্ডকপি পাঠানোর এড্রেস: Link
  • হার্ডকপি পাঠানোর জন্য কুরিয়ার সার্ভিস: ডিএইচএল/দেশ কুরিয়ার


ইউনিএসিস্ট এ একাউন্ট ওপেনের সময় অবশ্যই আপনার মার্জিত ইমেল এড্রেস ব্যাবহার করবেন এবং সব জায়গায় আপনার সেইম পোস্টাল এড্রেস ব্যাবহার করবেন। কেননা আপনার ইমেল এবং ক্ষেত্র বিশেষে আপনার পোস্টাল এড্রেস এ আপনার অফার লেটার আসবে। 


এবার অফার লেটার এর অপেক্ষা....


অফার লেটার পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত থাকছে পরের পর্ব গুলিতে... 

© Mahbubur Rahman


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url